ফিটকিরি পানি বিশুদ্ধ করার কাজে। তাছাড়া মুখের দুর্গন্ধ দূর করতে, ত্বকের ক্ষত কমাতে, ব্রণের সমস্যা দূর করতে, বয়সের ছাপ ঠেকাতে, ঘামের দুর্গন্ধ দূর করে। ফিটকিরি ত্বকের সমস্যা থেকে শরীরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঠেকাতে সাহায্য করে। আশা রাখছি, পোস্ট পড়লে ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা| ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হবেন।
ফিটকিরি কাজ কি
নানাভাবে কাজে লাগানো যায় ফিটকিরি। অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল গুণাগুণ ফিটকিরিতে পাওয়া যায়, যা ইউরিন ইনফেকশন দূর করতে সহায়ক। গোপন-অংশ ফিটকিরির জল দিয়ে পরিষ্কার করা হয়, যা সংক্রমণ কমায়। প্রায়শই ছোট শিশু এবং বৃদ্ধরা অনেক সময় আঘাত পায় যার কারণে তাদের রক্ত বের হতে থাকে। ফিটকিরি আমাদের আরও অনেক উপকারে আসে। আসুন জেনে নেওয়া যাক ফিটকিরির অন্যান্য গুণাগুণ।
প্রচুর গুণ কিন্তু রয়েছে ফিটকিরি পানি পরিস্রুত হয়ে, নোংরা থিতিয়ে পড়ত নীচে, বা দাড়ি কাটতে গিয়ে ব্লেডে গালটা আচমকা কেটে গেলে, স্যাভলন বা কোনও আফটারসেভের খোঁজ পড়ত না।
মুখে ব্রণ এ ফিটকিরি ব্যবহার
মুখে ব্রণ হলে ফিটকিরি ব্যবহার করতে পারেন। এক চামচ মুলতানি মাটি, দুই চামচ ডিমের সাদা অংশ ও এক চামচ ফিটকিরি গুঁড়ো দিয়ে প্যাক বানান। প্যাকটি মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। এই ভাবে সপ্তাহে অন্তত তিন দিন এই মিশ্রণ মুখে মাখুন। দ্রুত উপকার মিলবে। গরমের দিনে ব্রণের সমস্যায় নাজেহাল কমবেশি সবাই। ব্রণের লালচে ভাব বা ফোলা ভাব কমবে।
ফুসকুড়ি হচ্ছে? মুখ ড্রাই হয়ে, চামড়া কুঁচকে যাচ্ছে? চিন্তা করবেন না। ভালো করে মুখ ধুয়ে নিয়ে, সারা মুখে অনেকক্ষণ ধরে ফটকিরি ঘষুন। বা ফটকিরি চূর্ণ পানিতে গুলে, মুখে মাখুন। শুকিয়ে গেলে, কিছুক্ষণ পর মুখটা ধুয়ে ফেলুন। এ ভাবে কিছু দিন করলে, মুখে ঊজ্জ্বলতা ফিরবে। ব্রন-ফুসকুড়ির হাত থেকেও মুক্তি পাবেন।
আরো পড়ুনঃ মাথা থেকে অতিরিক্ত চিন্তা। নেগেটিভ, খারাপ চিন্তা দূর করার উপায়
ত্বকের ক্ষত কমাতে ফিটকিরি ব্যবহারের
দাড়ি কাটতে গিয়ে অনেক সময় আচমকা ত্বকে ক্ষত হয়ে যায়। কিংবা রান্নাঘরে কাজ করতে করতে হাত কেটে যায়। যদি, গাল কাটাই নয়, যে কোনও আঘাতে রক্তপাত হলে, সেখানে ফটকিরি চূর্ণ করে দিয়ে দিন। কিছুক্ষণের মধ্যেই রক্ত বেরোনো বন্ধ হবে।
স্ক্যাল্প পরিষ্কার
শ্যাম্পু করার পরও অনেকসময় মাথার ত্বক বা স্ক্যাল্পে ময়লা রয়ে যায়। ফলে দেখা দেয় উকুন সমস্যা। ফিটকিরি পানিতে গোসল করলে মাথার ত্বক এবং চুলের গোড়ার ময়লা পরিষ্কার হয়। এতে উকুনও মরে যায়।
টনসিলের ব্যথায় আরাম ও আঙুলে হাজা
ঠান্ডা লেগে গলায় ব্যথা হলে বা গ্ল্যান্ড ফুললে, গরম জলে এক চিমটে লবন ও ফিটকিরি চূর্ণ মিশিয়ে, দিনে কয়েকবার গার্গল করুন। স্বস্তি পাবেন। অতিরিক্ত পানি ঘাঁটার কারণে হাতে হাজা হলে, বা পায়ের পাতা ফুললে, নিশ্চিন্তে ফটকিরি ব্যবহার করতে পারেন।
এক টুকরো ফিটকিরি মেশানো পানিতে ফেলে, পানিটা ভালো করে গরম করে নিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে, পা চুবিয়ে রাখুন। দুরন্ত আরাম পাবেন।
দাঁতে ব্যথার যন্ত্রণা ও বেশী ঘাম
দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়ার কারণে অনেক সময় মুখে গন্ধে হয়। মুখের ভেতরে কোনো ঘা হলে, সেখানে ফিটকিরি লাগিয়ে নিন। জ্বালা করতে পারে এবং মুখের ঘা তাড়াতাড়ি শুকাবে। গোসলের সময় এক টুকরো ফিটকিরি জলে ভালো করে মিশিয়ে, গায়ে ঢেলে দিন। কিছু দিন এ ভাবেই গোসল করুন। কিন্তু, যাঁরা খুব বেশই ঘামেন, পরনের জামা চুপচুপে হয়ে ভিজে যায়, তাঁদের এই বিরক্তিকর অবস্থার হাত থেকে স্বস্তি দিতে পারে এক টুকরো ফিটকিরি। স্বস্তি মিলবে
বয়সের ছাপ ঠেকাতে ৪০ পেরোলেই ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে শুরু করে। এ ক্ষেত্রে পানিতে ফিটকিরির গুঁড়ো মিশিয়ে নিয়ে ফ্রিজে বরফ বানিয়ে নিন। প্রত্যেক দিন এই বরফ মুখে ঘষে নিয়ে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। দীর্ঘদিন নিয়মিত এই টোটকা মেনে চললে ত্বক মসৃণ ও টানটান হবে।
আশা করছি, ফিটকিরির উপকারিতা ও অপকারিতা| ব্যবহারের নিয়ম উপায় নিয়ে সঞ্জীবন বিস্তারিত বুঝাতে পেড়েছে। যদি কোন বিষয় সম্পর্কে পরামর্শ বা জানতে চান নিচে কমেন্ট করতে পারেন।